রঘু ডাকাত ও গগন ডাকাত পথ আটকেছিলো সারদা মায়ের : তারপরেই কালি র আবির্ভাব

8th November 2020 2:07 pm হুগলী
রঘু ডাকাত ও গগন ডাকাত পথ আটকেছিলো সারদা মায়ের : তারপরেই কালি র আবির্ভাব


সুজিত গৌড় ( হুগলী ) :  প্রায়  ৫০০ থেকে ৫৫০ বছর আগে সিঙ্গুরের ডাকাত কালি মন্দির ঘিরে রয়েছে নানা ইতিহাস। বৈদ্যবাটী-তারকেশ্বর রোডের পাশে পুরুষোত্তমপুর এলাকায় এই ডাকাতকালী মন্দির। কথিত আছে অসুস্থ ঠাকুর রামকৃষ্ণদেবকে দেখতে মা সারদা কামারপুকুর থেকে দক্ষিনেশ্বর যাবার পথে রঘু ডাকাত ও গগন ডাকাত মায়ের পথ আটকে দাঁড়ায় ডাকাতির উদ্যেশ্যে। সেই সময় রক্ত চক্ষু মা কালির মুখ দেখতে পায় ডাকাতরা। ভুল বুঝতে পেরে মা সারদার কাছে ক্ষমা চায়। সন্ধ্যা নামায় সেই রাতে ডাকাতদের আস্তানায় মা সারদাকে থাকার ব্যবস্থা করে দেয় ডাকাতরা। মা সারদাকে রাতে খেতে দেওয়া হয় চাল-কড়াই ভাজা। পরের দিন সকালে ডাকাতরা মা সারদাকে দক্ষিণেশ্বরে দিয়ে এসে ডাকাতি ছেড়ে দেয়। সেই থেকে কালিপুজোর দিনে মায়ের প্রথম নৈবিদ্য প্রসাদ হিসাবে চাল-কড়াই ভাজা দেওয়া হয়। এ ছাড়াও লুচি ভোগ, ফল দেওয়া হয় পুজোর প্রসাদ হিসাবে। মন্দিরের সেবাইত রবীন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায় বলেন, কালি পুজোর দিন চার প্রহরে চার বার পুজো ও ছাগ বলি হয়।ইতিহাস বলে, আগে এই এলাকায় পাশে সরস্বতী নদীর পাশে জনমানব শূন্য জঙ্গলে ডাকাতরা মাটির কুঁড়ে ঘর বানিয়ে ঘট পুজো করে ডাকাতি করতে যেত। শোনা যায় আগে নরবলি হত। পরে বর্ধমানের রাজার দান করা জমিতে সিঙ্গুর থানার চালকেবাটি গ্রামের মোড়ল রা এই মন্দির তৈরি করে মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। কালি পুজোর দিন মোড়ল দের পূজোর পর অন্য ভক্তদের পুজো নেওয়া হয়। পুরসোত্তমপুর গ্রামে এই ডাকাত কালির মন্দির থাকার কারণে মল্লিকপুর, জামিনবেড়িয়া ও পুরসোত্তমপুর এই তিন গ্রামে কোনো বাড়িতে বা বাড়োয়ারীতে হয় না কোন কালিপুজো। এমন কি কোন বাড়িতে দেওয়ালে টাঙানো থাকেনা ক্যালেন্ডারে আঁকা কালী মূর্তি। মা এতটাই জাগ্রত যে এই প্রতিমার পুজো ছাড়া অন্য কালী প্রতিমার পুজো করতে সাহস পায় না এলাকার মানুষজন। বছরে একবার কালীপুজোর দিন 'শুদ্রদের' আনা গঙ্গা জলে মন্দিরের দরজা বন্ধ করে ঘটের জল পাল্টানো হয়। সেই সময় কোনও মহিলা মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করতে পারেনা। তবে এইবছর করোনা পরিস্থিতির কারণে কালীপুজোর দিন রাতে মন্দির সংলগ্নে আতসবাজির প্রতিযোগীতা বন্ধ রাখা হয়েছে। মন্দিরের বাইরে ব্যারিকেড করা হবে। মাস্ক ও স্যানিটাইজারের ব্যাবস্হা রাখা হবে। মন্দিরের ভিতরে কোনো ভক্তদের উঠতে দেওয়া হবে না। কালিপুজোর পরদিন মন্দির থেকে খিচুড়ি ভোগ খাওয়ানো বন্ধ রাখা হয়েছে।





Others News

নিম্মচাপের জেরে অতিবৃষ্টি : হুগলী জেলায় ব‍্যাপক ক্ষতি চাষে

নিম্মচাপের জেরে অতিবৃষ্টি : হুগলী জেলায় ব‍্যাপক ক্ষতি চাষে


সুজিত গৌড় ( হুগলী ) :  নিম্ন চাপের জেরে শনিবার থেকে অকাল বৃষ্টিতে মাথায় হাত চাষীদের।
জেলায় আলু চাষে ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়ে যাবে কয়েক লক্ষ টাকার উপর বলে দাবি চাষীদের। ধান জমিতে যেমন ক্ষতির পাশাপাশি হুগলী জেলা জুড়ে ব্যাপক ক্ষতি এবার আলু চাষে। চলতি বছরে বার বার নিম্নচাপ  চাপের জেরে যেভাবে ধান চাষ পিছিয়ে ছিল ঠিক আলু চাষও পিছিয়ে ছিল প্রায় পনোর দিন। তবে গত শুক্রবার পযন্ত হুগলী জেলায় প্রায় ৩০ শতাংশ জমিতে বসানো হয়ে গিয়েছিল আলু এবং ৬০ শতাংশ জমি আলু চাষ উপযোগী করে তুলে ছিলেন চাষীরা। ধান চাষের মত আলু চাষের শুরুতে এবার কাল হয়ে উঠলো অকাল বৃষ্টি। অকাল বৃষ্টির ফলে যে সব জমিতে ইতি মধ্যেই আলু বসানো হয়ে গিয়েছিল, সেই সব জমিতে জল জমে থৈ থৈ করছে। ফলে জমিতে বসানো সমস্ত আলু বীজ পচে নষ্ট হতে বসেছে।  কারণ আলু বসানোর পর অন্তত পনেরো থেকে কুড়ি দিন কোনো জলের প্রয়োজন পরে না আলু চাষের ক্ষত্রে।
এ বছর এক বিঘা জমিতে চাষ উপযোগী করে আলু বসানো পযন্ত চাষীদের খরচ পড়েছে প্রায় পনেরো হাজার টাকা অন্যদিকে আলু বসানোর আগে পর্যন্ত  এক বিঘা জমিকে  চাষ উপযোগী করে তুলতে খরচ পড়েছে প্রায় সাত হাজার টাকা। অর্থাৎ ইতি মধ্যে নিম্ন চাপের জেরে অকাল বর্ষণে হুগলী জেলার ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়েছে লক্ষ  লক্ষ টাকার উপর। জেলায় আলু চাষের জমির পরিমান ৯০ হাজার হেক্টর জমি। সেমবার সকাল থেকেই  আলু জমি থেকে জল বের করে আলু বীজ বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা করছেন চাষীরা। চাষীদের দাবি অকাল বর্ষণে একেবারে সর্বস্বান্ত  হয়ে পড়েছে। আবার নতুন করে আলু বসানো বা জমি তৈরি করে আবার আলু বসানো অনেকের পক্ষেই আর সম্ভব হবে না।
অন্যদিকে আবহাওয়া উপযোগী হলে পুনরায় জমি আলু চাষের উপযোগী করে আলু বসাতে সময় লাগতে পারে পনেরো থেকে কুড়ি দিন। ফলে আলু চাষে ফলন যেমন কমবে খাবার আলুর জোগানেও পড়বে টান। আগামী দিনে ধানের ক্ষতির ফলে যেমন  চালের যোগান টান পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।  ঠিক তেমনি আগামী দিনে খাবার আলুর জোগানেও টান পড়বে বলে মত চাষীদের।